Sunday 22 December 2024
2024-07-11 | রাজ্য | Latest Bengal Today | Views : 5968
গনপিটুনিতে মৃত ইরশাদ আলমের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নিউজ ডেস্ক , লেটেস্ট বেঙ্গল টুডে: গত শুক্রবার কলকাতার একটি ছাত্রাবাসে গণপ্রহারে খুন হয়েছিলেন ইরশাদ আলম। আজ নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল। তাঁরা ইরশাদ আলমের স্ত্রীকে দলের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানান। ফোনে তাঁরা আইএসএফের চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। নওসাদ সিদ্দিকী পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ইনসাফ পাবার জন্য আইনী লড়াইয়ে পরিবার চাইলে দল সাহায্য করবে। এছাড়া, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বা অন্যান্য বিষয়ে আর্থিক সহযোগিতার জন্যও দল সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। উল্লেখ্য, স্রেফ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ইরশাদ আলমকে গত শুক্রবার গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়। কলকাতার চাঁদনি চকের একটি টিভি মেরামতির দোকানে তিনি কাজ করতেন। থাকতেন বেলগাছিয়ার একটি ভাড়াঘরে। মুচিপাড়া থানার নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটের একটি সরকারি ছাত্রাবাসে তাঁকে চোর সন্দেহ করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে কতিপয় আবাসিক ছাত্র। এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই ঘটনা ফের উস্কে দিয়েছে দশবছর আগের এক দগদগে স্মৃতি। তখন কোরপান শাহ্ নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল এনআরএস হাসপাতালের একটি ছাত্রাবাসে। এই ধরণের ঘটনা কিন্তু এই রাজ্যে প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। ইদানিং ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে উত্তর ২৪ পরগণার বারাসত, অশোকনগর প্রভৃতি স্থানে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। দেখা যাচ্ছে গত এক সপ্তাহের মধ্যে ১২ জনকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে, যা অতি উদ্বেগজনক। আমরা দেখেছি, পুলিশ এইসব ঘটনায় নামকোয়াস্তে কিছু গ্রেপ্তার করে বিষয়গুলিকে ধামাচাপা দিয়ে দেয়। এই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমেও তোলপাড় তোলা হয় না। তথাকথিত লিবেরালরা চুপ করে থাকেন। তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে যেন লিঞ্চিঙের ঘটনা ঘটে না। কিন্তু এখানেও বিজেপি শাসিত রাজ্যের মতন দলিত-আদিবাসী-সংখ্যালঘুদের ওপর এইরকম হিংসাশ্রয়ী আক্রমণ ঘটে চলেছে, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। আমরা এই ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাই। সমাজের গভীরে এই অসুখ প্রবেশ করেছে। এগুলি একটা অসুস্থ সমাজের লক্ষণ। একটি সুস্থ সমাজে এইরকম পাশবিক ঘটনা ঘটতে পারে না।নির্দিষ্ট করে পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষের ওপর অত্যাচার বাড়ছে। সুতরাং যারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। অবিলম্বে ২০১৪ সালে সংসদে আনা Prevention of Communal and Targeted Violence (Access to Justice and Reparations) বিলটি বলবত করার জন্য রাজ্য বিধানসভায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই বিষয়ে আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী উদ্যোগ নেবেন। আর্থিক ক্ষতিপূরণ ছাড়াও যারা প্রশাসনের দায়িত্বে আছেন তারা এই ঘটনা আটকাতে যেন স্বতঃসিদ্ধ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেই বিষয়টি আইনে উল্লেখ থাকা দরকার। কোথাও গাফিলতি থাকলে তাদেরও যেন জবাবদিহি করার দায় থেকে মুক্ত না রাখা হয়।