Sunday 22 December 2024
2024-09-10 | দেশ | Latest Bengal Today | Views : 157
জনগণের কথা, লেটেস্ট বেঙ্গল টুডে: এতদ্বারা সকলকে অবগত করতে চাই যে, আজকে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট আর জি কর ইসুতে যে অন্তর্বতীকালীন রায় দিয়েছে তাতে আমরা খুশী হতে পারছি না। কোর্ট একটা বিষয়ে নির্দেশনামা দিয়েছেন এবং আর একটা বিষয়ে রাজ্যকে এভিডেভিট দিতে বলেছেন। ১. আর জি কর জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে হবে রোগীদের স্বার্থ বিবেচনা করে আগামী কাল বিকেল ৫ টার মধ্যে। না জয়েন করলে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে। আমরা এই নির্দেশিকা স্বাগত জানাই। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে পদত্যাগ বা সাসপেন্ড করার যে দাবি আন্দোলনকারীরা করেছে রাত জেগে, তার কি হল? আমি DBBC র পক্ষে আরো যোগ করতে চাই, সেই ৮-৯ আগস্ট কলকাতার টালা থানার ওসি, ডেপুটি কমিশনার পুলিশ, তদকালীন প্রিন্সিপ্যাল সন্দীপ ঘোষের গ্রেপ্তার করার অনেক তথ্য CBI এর হাতে থাকলেও কেন তাদের গ্রেপ্তারে সমস্যা? সন্দীপ ঘোষ গ্রেপ্তার হল দুর্নীতি মামলায়, কিন্তু কেন তাকে FIR বিলম্ব নিয়ে বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ইচ্ছাকৃত বিকৃতি নিয়ে তাকে অভয়ার মর্মান্তিক মামলায় এরেস্ট মেমো ধরানোর নির্দেশিকা কোর্ট দিলেন না? 2. সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, সুপ্রীম কোর্ট নিজে থেকে ( Suomoto) আর জি কর মামলা নিজে হাতে নিলেন, অথচ সাম্প্রতিক কালের বিলকিশ বানুকে নৃশংস গনধর্ষণ ও তার পরিবারকে গনহত্যা, কাটুয়ায় ন বছরের শিশুকে মন্দিরে টানা একমাস গনধর্ষণ ও শেষে হত্যা এবং শাসক দলের উকিলদের ধর্ষক খুনীদের পক্ষে মিছিল, উনাওতে বিজেপির বিধায়ক কতৃক দলিত কিশোরী ধর্ষণ ও তিনটি খুন, হাত্রাসে গনধর্ষণ ও ধর্ষিতা নিহত কিশোরীকে পরিবারের সম্মতি ব্যতিরেক পুলিশ কতৃক পুড়িয়ে ফেলা ও ধর্ষকদের জেল থেকে বার করে মালা দেওয়া, মনিপুরে দিবালোকে কুকী মেয়েদের গন ধর্ষণ তান্ডব, দিল্লিতে কুস্তিগীর সংসদের সভাপতি বিজেপি সাংসদ ব্রীজভূষণের কুস্তিগীরদের যৌন নির্যাতন, অতি সন্প্রতি বেনারাসে চার ধর্ষককে জামিন দিয়ে শাসক দল কতৃক তাদের গলায় ফুলের মালা দেওয়া, কনৌজে দুই দলিত কিশোরীকে পিটিয়ে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া, উজ্জয়িনীতে বেলা ১১ টায় ফুটপাতে অজস্র মানুষ ও পুলিশের সামনে দলিত মেয়েকে ধর্ষণ, চার বছর আগে মহারাষ্ট্রে পায়েল নামক আদিবাসী ডাক্তারকে হত্যা করা, সর্বোপরি,মালদার আফ্রাজুলকে রাজস্থানে পুড়িয়ে মারা, গত সপ্তাহে হরিয়ানায় ফরিদাবাদে বাসন্তীর তরতাজা পরিযায়ী শ্রমিককে গোমাংস খাওয়ার মিথ্যা অজুহাতে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মারা এবং গত পরশু রাজস্থানে মালদার পরিযায়ী শ্রনিক রোস্তমকে পিটিয়ে মেরে ফেলা -- এসব হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এসবের কোনটি সুপ্রীম কোর্টের চোখে suomoto স্থান কেন এতোদিন পেল না? আর জি কর মামলা নেওয়া প্রশংশনীয় কাজ,, কিন্তু আমাদের প্রশ্ন : কেন বেছে বেছে আর জি করকে নিয়ে বাকিগুলোর একটিকেও নেওয়া হল না? এটা কি বিচারের নিরপেক্ষতা? নাকি বিচারের নামে কেন্দ্রীয় শাসক শ্রেণীকে তুষ্ট করা ও বিরলতম ধর্ষণ -খুনকে কতিপয় বিরোধী দল বা দলগুলির ঘোলা জলে মাছ ধরার সুযোগ করে দেওয়া? 3. সবশেষে মনে করিয়ে দিই, সুপ্রীম কোর্টকে justice delayed is justice denied... বিলম্বিত বিচার মানে বিচার না পাওয়া। শুধু আর জি কর নয়, উল্লেখিত সব কটি ক্ষেত্রে এটা সত্যি, যাদের পরিবারের সদস্যরা বিনিদ্র রজনী যাপন করে চলেছেন শুধু এক বিন্দু ন্যায় বিচারের আশায়। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত, স্বয়ং আদালত রাজনীতিকরণের গাড্ডায় আর লাল ফিতের বাধনে আটকে পড়ে আছে। সবচেয়ে বেশি অবহেলার বলি হচ্ছে ছাপোষা বহুজন সমাজের পরিবারগুলি যাদের জন্য বিচার নীরবে নিভৃতে কাদে। যাদের পাশে নেই মিডিয়া, অর্থ আর খুটির জোর। হায় স্বাধীন ভারত, হায় আজাদী, হায় বিচার। "We want Justice" এর দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মিছিলের ৮ বছরর শিশুটি একদিন জানতে পারবে বিচার নামক প্রহসনের ইতিবৃত্তান্ত। জানতে পারবে, বিচার কিনে নেয় এ দেশে ধনিক বনিক আর উচ্চবর্ণীয় উচু তলার গুটিকয়েক মানুষ। লিখেছেন ড. শামসুল আলম সভাপতি, দেশ বাচাও বাংলা কমিটি