Sunday 22 December 2024
2024-08-08 | রাজ্য,বাংলাদেশ ,রাজনীতি | Latest Bengal Today | Views : 233
মনোয়ার হোসেইন, লেটেস্ট বেঙ্গল টুডে: বর্ধমান শহরে তেতুলতলা বাজারের লস্কর দিঘি মহল্লাতে সাজো সাজো রব, সাধারণ মানুষ সাংবাদিক ভিড় জমিয়েছেন মহাম্মদ হোসেনের বাড়িতে, পুত্র আস্তাক হোসেন ওরফে বাবু জানালেন যে তার দুলাভাই অর্থাৎ জামাইবাবু মহাম্মদ ইউনুস সাহেব পড়শি দেশ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে যোগদান করেছেন। মহাম্মদ ইউনুস 28 জুন ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতের চট্টগ্রাম হাটহাজারীর বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজি দুলামিয়া মাতা সুফিয়া খাতুন। নয় ভাই বোনের তৃতীয় সন্তান। বাংলাদেশের সামাজিক উদ্যোক্তা ,অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ তিনি ই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হলেন ৮ ই আগস্ট ২০২৪। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষুদ্রঋণ ও ক্ষুদ্র বিত্ত ধারণার প্রবর্তনের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেছিলেন । বর্তমান বয়স ৮৪ বছর। বিশ্ব ইতিহাসে মাত্র ১২ জন এক সঙ্গে নোবেল, আমেরিকান প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড ও মার্কিন কংগ্রেসানাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তাদের অন্যতম মহাম্মদ ইউনুস, সেদিক থেকে বিচার করলে তিনি এশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানীয় বিশ্ব পথিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি। মেট্রিকুলেশনের ১৬ তম স্থান পেয়েছে । স্বাধীনতা বিষয় পুরস্কার ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে। বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার ১৯৯৪, আন্তর্জাতিক গান্ধী পুরস্কার ২০০০, নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০০৬, ভলভো পরিবেশ পুরস্কার ২০০৩, যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম ২০০৯, কংগ্রেসনাল গোল্ড মডেল ২০১০। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকাতে ফুল স্কলারশিপে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি নাগরিক কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকাতে সমর্থন সংগ্রহ অংশগ্রহণ করে হইচই ফেলে দেন এবং স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করেন। ১৯৭৫ থেকে ৮৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন ১৯১২ থেকে ১৯১৮ স্কটল্যান্ড এর গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলার ছিলেন। ১৯ ৯৬ খ্রিস্টাব্দে সাবেক বিচারপতি মোঃ হাবিবুল্লাহ রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা দায়িত্ব ইতিমধ্যে পালন করেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে ভেরা ফরোস্টোনকোর নামের এক রাশিয়ান কন্যাকে আমেরিকায় পড়াশোনার সুবাদে পরিচিতি ও বিবাহ ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে একটি কন্যা সন্তান মনিকা ইউনুস জন্মগ্রহণের তিন মাস পরই ডিভোর্স হয়ে যায়। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে মহাম্মদ ইউনুস দ্বিতীয়বার আফরোজি বেগমকে বিবাহ করেন তখন আফরোজি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থ বিদ্যা নিয়ে পিএইচডি করছেন তখন পরিচয় ও বিবাহ পরবর্তীকালে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে একটি কন্যা সন্তান গ্রহণ করেন যার নাম দেনা আফরোজ ইউনুস। আফরোজী বেগমের অর্থাৎ মহাম্মদ ইউনুসের শ্বশুরবাড়ি বর্ধনের তেঁতুলতলা বাজারের লস্কর দিঘিতে। শশুরের নাম মোঃ হোসেন শাশুড়ি মা সিতারা বেগম। তৎকালীন যুগে মোঃ হোসেন ছিলেন বর্ধমান আদালতের স্কোর যিনি ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মেট্রিকুলেশনে প্রথম বিভাগে পাশ করে নজর পেরেছিলেন ব্রিটিশ এবং বর্ধমান বাসির। মোঃ হোসেনের ১০ সন্তান সকলকেই মানুষের মতন মানুষ করেছিলেন। প্রথম সন্তান আনিসুল হোসেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান বাস্তুকার ও বোর্ড মেম্বার । দ্বিতীয় সন্তান আলতাফ হোসেন ইউএসএ নিউইয়র্কের সুপ্রতিষ্ঠিত নাগরিক, তৃতীয় সন্তান আশফাক হোসেন বাবু বর্ধমানে মা সিতারা বেগমকে নিয়ে নিজের সুপার মার্কেট পরিচালনা করেন, চতুর্থ সন্তান ফিরজি বেগম বাংলাদেশের একটি কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপিকা, পঞ্চম সন্তান চিকিৎসক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, ষষ্ঠ সন্তান আফরোজি বেগম ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা যিনি মোঃ ইউনুসের সহধর্মিনী, সপ্তম সন্তান ফেরদৌসী বেগম লন্ডনে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা, অষ্টম নবম দশম তিন মেধাবী সন্তান অকালে মারা গেছেন। ইউনুস সাহেবের স্ত্রী অর্থাৎ আফরোজী বেগম বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে স্নাতক তারপর বড় ভাই আনিসুল হকের কাছে চলে যান এবং সেখান থেকেই পদার্থবিদ্যায় গবেষণা ও পিএইচডি করতে লন্ডন পাড়ি দেন। মোঃ ইউনুস ও আফরোজি বেগম ১৯৮৬ ৮৭ খ্রিস্টাব্দে ৩৭ বছর আগে শেষবার বর্ধমান এসেছিলেন দিল্লি থেকে ফেরার পথে একদিনের জন্য বর্ধমান ছিলেন। বর্ধমানের জনগণ আনন্দে আত্মহারা তাদের ঘরের জামাই পরশি দেশ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান নিযুক্ত হওয়ায়।